জাদুকাটা নদী সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে একটি তীর্থস্থান, যেখানে প্রতি বছর বারুণী স্নানযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
জাদুকাটা নদী সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে একটি তীর্থস্থান, যেখানে প্রতি বছর বারুণী স্নানযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
অদ্বৈত আচার্য ঠাকুরের জন্মস্থান ও স্মৃতিবিজড়িত লাউড় রাজ্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি মহা তীর্থস্থান।
প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে লক্ষাধিক ভক্ত জাদুকাটা নদীতে স্নান করে পূণ্য অর্জন করেন।
পণতীর্থে স্নান করে ভক্তরা সমস্ত তীর্থের পূণ্য একবারে লাভ করেন, যা বারুণী যোগে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
🙏 “সবতীর্থ বারবার, পণতীর্থ একবার” 🙏
📍 স্থান: শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধাম, রাজারগাঁও (লাউড়-নবগ্রাম), তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ
🗓️ তারিখ:
🔸 ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬ মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | বুধবার
🔸 ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭ মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | বৃহস্পতিবার
🌅 বিশেষ শুভযোগ:
✅ শতভিষানক্ষত্র যুক্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথি
✅ গঙ্গাস্নান ও পূজার মাধ্যমে কোটিগুণ শুভফল প্রাপ্তির সুযোগ
✅ মহাবারুণী গঙ্গাস্নান ও ধর্মীয় কার্যক্রম
🔖 আয়োজনে:
শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধাম কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটি
রাজারগাঁও (লাউড়-নবগ্রাম), তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ
লোকসংস্কৃতি ও লোক ঐতিহ্যের অন্যতম আধার সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার অন্তর্গত জাদুকাটা নদী যার উৎপত্তি ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে। সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে বিশেষ মাহাত্ম বহন করে এই জাদুকাটা নদী। স্থানটি পূণ্যতীর্থ ধাম হিসেবে সর্বজন পরিচিত। শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর পার্ষদ মহাবিষ্ণুর অবতার শ্রীল অদ্বৈত আচার্য ঠাকুরের আবির্ভাব স্থল বা লীলাভূমি এ পণতীর্থ ধাম।
অদ্বৈত আচর্য ঠাকুরের মূল আবির্ভাব ভূমি তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নবগ্রামে। নবগ্রাম ছিল লাউড় রাজ্যের লাউড়ের গড় এলাকা। কিন্তু নবগ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বহু আগে। বর্তমানে অদ্বৈত আচার্য ঠাকুরের যে মন্দিরটি রয়েছে, তা জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী লাউড়ের গড়ের পাশের রাজারগাঁও গ্রামে। অদ্বৈত আচার্যের স্মৃতিচিহ্ন বিজড়িত স্থানটি সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে মহা তীর্থস্থান। ঐতিহাসিক সূত্র মতে, প্রাচীন শ্রীহট্ট এক সময় জৈন্তা রাজ্যের অংশ ছিল। পরবর্তী সময়ে তিনটি অংশে বিভক্ত হয়। রাজ্য তিনটির নাম ছিল জৈন্তা, গৌড় ও লাউড়। জৈন্তাপুরের দশম রাজা গোবিন্দরাজ কেশব দেব একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে রাজত্ব করেন। এরপর হাথকের পুত্র গুহক জৈন্তার রাজা নিযুক্ত হন। গুহক তার তিন পুত্রকে সমানভাবে রাজত্ব ভাগ করে দিলে লুব্দুকের নামানুসারে তার অংশের নাম হয় লাউড়। লাউড় রাজ্য বর্তমান লাউড়ের পাহাড় এবং সুনামগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। পরবর্তী সময়ে লাউড়ের রাজত্ব করেন আচার্য্য পরিবারের অরুণাচার্য্য বিজয় মানিক্য। সর্বশেষ দিব্যসিংহ।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে বৈষ্ণব সাধক অদ্বৈতাচার্য্যর পিতা কুবেরাচার্য্য বা কুবের মিশ্র তর্ক পঞ্চানন রাজা দিব্য সিংহের মন্ত্রী ছিলেন। কুবেরাচার্য্য ছিলেন পণ্ডিত শাস্ত্রবিদ ও সভাপতি। কিন্তু মন্ত্রী কুবেরাচার্য্যরে পর পর ছয়টি সন্তান মারা যাওয়ায় তার মনে ছিল প্রচণ্ড কষ্ট। তাই তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ভারতে চলে যান। পরবর্তী সময়ে রাজা দিব্য সিংহের আহ্বানে তিনি পুনরায় লাউড়ে ফিরে আসেন। কিছুকাল পর ১৪৩৫ খ্রিস্টাব্দে তার স্ত্রী নাভা দেবীর গর্ভে এক সন্তান লাভ করেন। কমলের মতো সুন্দর বলে তার নাম রাখেন কমলাক্ষ। কমলাক্ষের মাতা নাভাদেবী স্বপ্নে দেখতে পান তার ক্রোড়স্থ শিশু শঙ্খচক্র গদাপদ্বধারী মহাবিষ্ণু। এ পবিত্র স্থানটি সম্পর্কে অদ্বৈত প্রকাশ, অদ্বৈত মঙ্গলসহ বহু বৈষ্ণবীয় গ্রন্থে বিস্তর বর্ণনা রয়েছে।
চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিকে বলা হয় মহা বারুণী। “বারুণী যোগেতে স্নান বহু ফলপ্রদ।” তাই প্রতি বছর বারুণী যোগে জাদুকাটা নদীর তীরে সনাতন ধর্মাবলম্বী বহু লোকের সমাগম হয় স্নানযাত্রা মহোৎসবে। সব তীর্থ বারবার স্নানে যে পূণ্য লাভ হয় পণতীর্থ একবার স্নানে সেই পূণ্য লাভ হয়ে থাকে। কারণ সেখানে সপ্ত গঙ্গা একসঙ্গে প্রবাহিত হয় উক্ত তিথিতে। তাই সব তীর্থ স্নান করলেও পণতীর্থে স্নান আবশ্যক। তাই বলা হয় সব তীর্থ বারবার পণতীর্থ একবার। তীর্থগণও পণ করে গিয়েছিলেন পৃথিবী যতদিন বর্তমান থাকবে ততদিন প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে তীর্থগণের আগমন ঘটবে এ স্থানে। সেই থেকে আজ অবধি উক্ত তিথিতে সপ্ত গঙ্গা প্রবাহিত হন।
প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে পূণ্যস্নানের জন্য এ স্থানে কয়েক লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে এখানে ভক্তরা স্নান ও তর্পণ করেন, সারা রাত ধরে মন্দিরগুলোতে চলে কীর্তন। এই পূণ্যতীর্থ প্রতি বছর গঙ্গাস্নান একবারই হয়ে থাকে। এই দিন ও ক্ষণের জন্য ভক্তরা অধীর আগ্রহে থাকেন পুরো বছর
প্রতি বছর মাঘ মাসের ত্রয়োদশীতে উদযাপিত।
মন্দিরটি ভক্তদের জন্য এক আশীর্বাদস্থল হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যহকর্ম বলতে প্রতিদিনের নিয়মিত পূজা-অর্চনা, প্রার্থনা, ধ্যান, ও দেবতার উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য অর্পণকে বোঝায়। এটি দৈনন্দিন ধর্মীয় আচরণের অংশ, যা মন ও আত্মাকে শুদ্ধ করে।
আপনার দানে আমাদের মন্দিরের উন্নয়ন ও ধর্মীয় সেবা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করুন। আপনার সহানুভূতি ও সহায়তা আমাদের সমাজে আরও বেশি ভাল কাজ করার সুযোগ তৈরি করবে।
একটি দীর্ঘমেয়াদী দান যেটি সাধারণত ধর্মীয়, শিক্ষা বা সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী উন্নতির জন্য গঠিত হয়।
সামগ্রিক সাহায্য যা কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া সাধারণভাবে করা হয়।
মন্দির পুনর্নিমাণ হলো মন্দিরের অবকাঠামো বা অভ্যন্তরীণ পরিসর উন্নত করার প্রক্রিয়া।
দেবতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় আচার।
প্রত্যহকর্ম বলতে প্রতিদিনের নিয়মিত পূজা-অর্চনা, প্রার্থনা, ধ্যান, ও দেবতার উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য অর্পণকে বোঝায়। এটি দৈনন্দিন ধর্মীয় আচরণের অংশ, যা মন ও আত্মাকে শুদ্ধ করে।